আফগান পাসপোর্টধারীদের ভিসা ইস্যু স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় অবিলম্বে আফগান পাসপোর্টধারী ব্যক্তিদের জন্য ভিসা ইস্যু স্থগিত করছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (৩০ নভেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে সব মার্কিন দূতাবাস এবং কনস্যুলার দপ্তরে এ বিষয়ক তারবার্তা পাঠিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই বার্তায় বলা হয়েছে, কোনো আফগান ব্যক্তিকে যেন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রদান না করা হয় এবং যেসব আফগানের ভিসা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে— তা যেন তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করা হয়।
এমনকি বর্তমানে আফগানিস্তানের যেসব নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, পররাষ্ট্র দপ্তর আফগান পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভ্রমণকারী সব ব্যক্তির জন্য ভিসা ইস্যু স্থগিত করছে।
রুবিও বলেন, আমাদের জাতি ও জনগণের সুরক্ষার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বড় কোনো অগ্রাধিকার নেই।
গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলির প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে আফগান নাগরিক রহমানউল্লাহ লাকানওয়ালের নাম প্রকাশের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। ওই হামলায় ন্যাশনাল গার্ডের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত অন্য সদস্যের অবস্থাও গুরুতর।
অভিযোগ রয়েছে, হোয়াইট হাউসের কাছে টহল দেওয়ার সময় লাকানওয়াল পশ্চিম ভার্জিনিয়া ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য সারাহ বেকস্ট্রম এবং অ্যান্ড্রু উলফের ওপর অতর্কিত হামলা চালান।
এই সপ্তাহে সিআইএ নিশ্চিত করেছে, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা বাহিনী প্রত্যাহারের পরপরই লাকানওয়াল যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তিনি আফগানিস্তানে সিআইএর হয়ে কাজ করেছিলেন।
এদিকে শুক্রবার ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার মার্কিন অ্যাটর্নির কার্যালয় জানিয়েছে, লাকানওয়ালের বিরুদ্ধে হত্যা ও সশস্ত্র অবস্থায় হত্যার উদ্দেশ্যে দুটি হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ১৯টি দেশের নাগরিকদের গ্রিনকার্ড আবেদন আবার যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দেন। পরে বলেন, তিনি তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে অভিবাসন স্থগিত করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
ট্রাম্প অবশ্য তৃতীয় বিশ্ব শব্দটির সংজ্ঞা দেননি। তবে শব্দটি প্রায়শই গ্লোবাল সাউথের উন্নয়নশীল দেশগুলোর সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ট্রাম্প আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রকৃত অর্থ সম্পদ নন বা আমাদের দেশকে ভালোবাসতে অক্ষম, এমন যেকোনো ব্যক্তিকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, (আমি) দেশের শান্তি ক্ষুণ্ণকারী অভিবাসীদের নাগরিকত্ব বাতিল করব এবং সরকারি সাহায্যের বোঝা, নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বা পশ্চিমা সভ্যতার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ যেকোনো বিদেশি নাগরিককে বের করে দেব।
গত জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ট্রাম্প অভিবাসন সীমিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। গত অক্টোবরে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, তার প্রশাসন ২০২৬ সালে মাত্র ৭ হাজার ৫০০ শরণার্থী গ্রহণ করবে, যা ১৯৮০ সালের পর সর্বনিম্ন।
ছবিঃ সংগ্রহ

