ম্যালেরিয়ার টিকার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ম্যালেরিয়ার টিকার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ার একটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের তৈরি এই টিকা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে ছয় বছর আগে। এরপর ঘানা, কেনিয়া ও মালাউয়িতে এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগেও সফলতা আসে। এরপরেই বুধবার (৬অক্টোবর) এর অনুমোদন দেওয়া হল। খবর, বিবিসি।
ডব্লিউএইচও বলেছে, সাব-সাহারা আফ্রিকার মত যেসব এলাকায় ম্যালেরিয়ার মাঝারি থেকে উচ্চ প্রকোপ দেখা যায়, সেখানে এই টিকা প্রয়োগ করা উচিত।
বিশ্ব সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেন, শিশুদের জন্য ম্যালেরিয়া টিকার প্রতীক্ষা বহু দিনের। বিজ্ঞান, শিশু স্বাস্থ্য ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে এটা যুগান্তকারী ঘটনা। এই টিকা প্রতিবছর লাখো মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।
ম্যালেরিয়ার মূলে রয়েছে প্লাজমোডিয়াম গোত্রের পরজীবী। আর এ রোগ মানুষের শরীরের পৌঁছায় স্ত্রী-অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। অনুমোদন পাওয়া ‘আরটিএসএস’ টিকা শিশুদের শরীরে প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরামের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করবে।
যে পাঁচটি প্রজাতির প্লাজমোডিয়ামের কারণে ম্যালেরিয়া হয়, তারমধ্যে প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম সবচেয়ে প্রাণঘাতী এবং আফ্রিকায় এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের তৈরি করা আরটিএস,এস নামের এই টিকা কেবল ম্যালেরিয়া নয়, যে কোনো পরজীবীঘটিত রোগের বিরুদ্ধে মানুষের তৈরি করা প্রথম কার্যকর টিকা।
২০১৫ সালে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা যায়, এ টিকা প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জনের শরীরে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। আক্রান্ত হলেও প্রতি দশজনে তিনজনের গুরুতর অসুস্থ হওয়া রোধ করে। আর আক্রান্ত হলে শিশুদের দেহে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজনীয়তা এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনে।
তবে কার্যকর সুরক্ষা পেতে এ টিকার চারটি ডোজ নিতে হয়। শিশুর বয়স পাঁচ মাস মাস হলে এক মাস অন্তর প্রথম তিনটি ডোজ দিতে হয়।আর চতুর্থ বুস্টার ডোজটি দিতে হবে ১৮ মাস বয়স হলে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর ম্যালেরিয়ায় বিশ্বের প্রায় ২৩ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে চার লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারান।এসব মৃত্যুর ৯৫ শতাংশই ঘটে আফ্রিকান দেশ গুলোতে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও, পাহাড়ি অঞ্চলে এখনও এর ভয়াবহতা রয়েছে। একশ বছরের বেশি সময় ধরে চেষ্টার পর ম্যালেরিয়ার একটি কার্যকর টিকা তৈরির বিষয়টি চিকিৎসা শাস্ত্রের জন্য বড় এক অর্জন।
ছবিঃ সংগ্রহ

