অর্কিড

অর্কিড – অতুলনীয় সৌন্দর্যের হাউস প্ল্যান্ট

বিশ্বজুড়ে সমাদৃত ফুল অর্কিড । বৈচিত্রময় অর্কিড সব বয়সী মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় । আকর্ষণীয় রঙ, বিভিন্ন ধরণের গড়ন , সুগন্ধ , ঔষধি গুণ , দীর্ঘস্থায়িত্বই এর প্রধান বশিষ্ট । ছাদে বা টবে যেখানেই চাষ করা হোক না কেন অর্কিডের অনিন্দ্য সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করবেই । অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রতীক অর্কিড ছাদ বা বারান্দার শোভা বর্ধনে জনপ্রিয় একটি হাউস প্ল্যান্ট ।
অর্কিড

অর্কিড

অর্কিড বিভিন্ন কাজে ব্যবহার কার হয় । বেশ কিছু পারফিউম তৈরি হয় অর্কিড থেকেই । এর ঔষধি গুণের জন্য প্রাচীন আমল থেকেই বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে অর্কিড ব্যবহৃত হয়ে আসছে । চিনারা খৃষ্টপূর্ব ২৮০০ থেকেই ভেষজ প্রতিকারক হিসেবে ব্যবহার করে আসছে অর্কিডকে । আফ্রিকার অনেক জায়গায় অর্কিড টিউবার খাদ্য হিসেবে বিক্রি হত । এখনও অনেক দেশে এটি খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় । ভ্যানিলা তৈরিতে অর্কিডের গুরুত্ব প্রচুর । ফ্লেভার তৈরিতেও অসাধারণ ভুমিকা পালন করে অর্কিড ফুল । প্রায় তিন হাজারের বেশি প্রজাতির অর্কিড রয়েছে পৃথিবীজুড়ে । আবার সব অর্কিড আমাদের দেশের জন্য উপযুক্ত নয় ।
অর্কিড

অর্কিড

চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে অর্কিডে ফুল আসা শুরু হয় । আমাদের দেশে মার্চ থেকে মে মাসে ফুল ফোটে । কিছু অর্কিড বছরে দু- তিন বার ফোটে । বাড়ির ছাদে বা বেলকনিতে লাগানো অর্কিডের ফুল না তোলাই ভাল ,কেননা ৪০-৪৫ দিন ফুল গাছেই সতেজ থাকে । ভেজা আবহাওয়া বা বৃষ্টির সময় ফুল তোলা ঠিক নয় ।
অর্কিড

অর্কিড

আমাদের দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে এমন অর্কিড বেলকনি বা ছাদে লাগানো যেতে পারে । অর্কিড সাধারণত দুধরণের , এপিফাইটিক বা পরজীবি ও টেরেস্ট্রিয়াল বা মাটিতে যেগুলো জন্মে । টেরেস্ট্রিয়াল অর্কিডই ঘরে চাষের উপযুক্ত , পরিচর্যা করা সুবিধাজনক । নার্সারি থেকে গাছ কেনার আগে এবিষয়ে জেনে নেওয়াই ভাল ।
অর্কিড

অর্কিড

সঠিক আকার , রঙ পেতে অর্কিডের পর্যাপ্ত পরিচর্যার প্রয়োজন হয় । তবে নিয়মিত যত্ন ও চাষের নিয়মাবলী মেনে চললে অর্কিডের ভাল ফলন সম্ভব ।

আদ্র বাতাস অর্কিড গাছের জন্য ভাল । মাটিতে চারা লাগানোর পর হালকা পানি দিয়ে দিলে চারা মাটিতে ভালভাবে স্থাপিত হয় । অর্কিডের জন্য ৬০-৭০ শতাংশ আদ্রতার প্রয়োজন হয় ।

মাটির টব বা বাঁশের ঝুড়িতে অর্কিডের চাষ করা যায় । ছিদ্রযুক্ত টব নির্বাচন করতে হবে যাতে বায়ু চলাচল করতে পারে ।

ছায়াযুক্ত ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ অর্কিডের জন্য উত্তম । সকালের প্রথম রোদ অর্কিডের জন্য খুব উপকারী ।

পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে , কেননা অতিরিক্ত পানি অর্কিডের জন্য ক্ষতিকর ।সপ্তাহে ২/৩ দিন গাছে পানি স্প্রে করতে হবে । অর্কিডের মোটা শেকড় পানি ও সার ধরে রাখতে সক্ষম ।

প্রখর রোদ অর্কিডের জন্য ক্ষতিকর , ফুল ভালভাবে ফোটে না । যে গাছ আলোতে বাঁচে না , সে গাছ ছায়ায় রাখতে হবে ।

অর্কিডের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ইউরিয়া , টিএসপি , এমপিও সার পানিতে মিশিয়ে গাছের পাতা ও শেকড়ে ভাল করে স্পে করতে হবে । লক্ষ্য রাখতে হবে যেন সারের মাত্রা বেশি না হয় । অত্যধিক সার অর্কিডের জন্য ক্ষতিকর ।

অর্কিডের টব ও গাছ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে রোগ বা পোকার আক্রমণ হয় না । সেভিন পাউডার ছিটিয়ে দিলে পিঁপড়া , পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় গাছ । গাছে ভাইরাস আক্রমণ হলে তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে যাতে অন্য গাছে সংক্রমণ না হয় ।

অর্কিড টবে দেয়া উপাদানের কার্যকারিতা দুই থেকে তিন বছরে শেষ হয়ে যায় । তাই দুবছর অন্তর টবের উপকরণ পরিবর্তন করে নিলে গাছের সতেজটা বজায় থাকে ।
অর্কিড

অর্কিড

এইচ/এ/

ছবিঃ সংগ্রহ

আরও খবর